অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাচারকারী চক্রে জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা, ট্রাভেল এজেন্সি জড়িত থাকায় অবনতি ঘটছে পরিস্থিতির। এদিকে, গত ৮ বছরে পাচারের শিকার ভুক্তভোগীদের করা ২ হাজার ৩৫টি মামলার মধ্যে বিচারকাজ শেষ হয়েছে মাত্র ১৬টির। মানবপাচারকারীদের তালিকা তৈরিতে হাইকোর্টের নির্দেশও উপেক্ষিত।
ভালো চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে সৌদি আরবে পাচার করা হয় কৃষকের কিশোরী কন্যাকে। সেখানে ধর্ষণ আর শারীরিক নির্যাতনের শিকার তরুণী অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হন। কিন্তু সমাজ একঘরে করে রেখেছে ভুক্তভোগী পরিবারটিকে।
ওই তরুণীর বাবা জানান, যারা অপরাধী তারা আমাকে বিরক্ত করছে। বিচারটা কোন জায়গায় গেলে পাবো।
মানবপাচারের শিকার আরও অনেকেরই এমন পরিণতি। কেউ কেউ নির্যাতনে হয়েছেন পঙ্গু, মানসিক ভারসাম্যহীন।
তারা জানান, যাদের টাকা আছে, তাদের বিচার আছে। আমাদের কিছু নেই তাই বিচারও নেই।
অভিবাসন সংস্থাগুলোর তথ্য বলছে, চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত শুধুমাত্র ভূমধ্যসাগর দিয়েই পাচার হয়েছেন ৫ হাজার ৩৬০ বাংলাদেশি।
ব্যাকের হেড অব মাইগ্রেশন প্রোগামের শরিফুল ইসলাম বলেন, এখানে দেখার বিষয় হচ্ছে কারা এখানে অর্থের সাথে জড়িত। এই লেনদেন কোন পর্যন্ত যাচ্ছে।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ বলছে, মানবপাচারকারীদের বিস্তৃত নেটওয়ার্কের কারণে অপরাধীদের ধরতে সময় লাগছে।
সিআইডির ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান বলেন, ক্যারিয়ার লেভেলের লোকদের যদি আমি ধরি তাহলে তারা নতুন লোকদের নিয়োগ দেবে। তাদের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত। এজন্য সময় লাগছে।
গত ৮ বছরে ঢাকা বিভাগে পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীদের করা ১ হাজার ৬৫৩টি মামলার মধ্যে বিচার শেষ হয়েছে মাত্র ৫টির।
সুপ্রিম কোর্টের লিগ্যাল এইডের আইনজীবী চঞ্চল কুমার বিশ্বাস বলেন, বিচারটা হলে অপরাধটা কমে যাবে। শুধু মামলা হলো জামিন পেল তাহলে অপরাধ কমবে না।
হাইকোর্ট ২০২০ সালে পাচারকারীদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দিলেও, আজও সেটা করে দেখাতে পারেনি প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো।