স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন সুরক্ষা সেবা বিভাগের হাতে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রম চলে যাচ্ছে।
এজন্য জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন, ২০১০ এ সংশোধনী আনার প্রয়োজন হবে। আইনে উল্লিখিত ‘নির্বাচন কমিশন’-এর স্থলে ‘সরকার’ শব্দ অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়োজন হবে।
এসব বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে সোমবার এ চিঠি পাঠানো হয়।
চিঠির অনুলিপি নির্বাচন কমিশন সচিবকেও দেওয়া হয়েছে। এ সিদ্ধান্তে ইসি কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
নির্বাচন কমিশনের একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ চিঠির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় তারা এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিতে রাজি হননি। নাম গোপন রাখার শর্তে তারা বলেন, আজ কমিশনের সভা রয়েছে । সভা শেষে আনুষ্ঠানিক প্রেস ব্রিফিং করার কথা রয়েছে।
তবে সভার এজেন্ডায় জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রম সুরক্ষা সেবা বিভাগে যাওয়ার বিষয়টি নেই। তবে কোনো কমিশনার বা ইসি সচিব চাইলে ‘বিবিধ’ এজেন্ডায় এ বিষয়টি বৈঠকে আলোচনার জন্য তুলতে পারেন।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের পরিচালক-১০ একেএম ফজলুর রহমান স্বাক্ষরিত চিঠি সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবের কাছে পাঠানো হয়। চিঠিতে বলা হয়েছে, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রম নির্বাহী বিভাগের দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় বিভিন্ন দেশের উদাহরণের আলোকে সুরক্ষা সেবা বিভাগ ওই দায়িত্ব পালনে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ বিবেচিত।
এজন্য এ সংক্রান্ত দায়িত্ব সুরক্ষা সেবা বিভাগে ন্যস্ত করার লক্ষ্যে ‘অ্যালোকেশন অব বিসনেস অ্যামং ডিফরেন্ট মিনিস্ট্রিস অ্যান্ড ডিভিশনস’ এ সুরক্ষা বিভাগের দায়িত্বসমূহের মধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন, ২০১০ এ ‘নির্বাচন কমিশন’ এর পরিবর্তে ‘সরকার’ শব্দ অন্তর্ভুক্তকরণসহ প্রয়োজনীয় সংশোধনের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
সুরক্ষা সেবা বিভাগ কর্তৃক জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিদ্যমান অবকাঠামো ও জনবল নির্বাচন কমিশন থেকে সুরক্ষা সেবা বিভাগে হস্তান্তরের ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।
জানা গেছে, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইনে নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার ক্ষমতা ও এখতিয়ার ইসিকে দেওয়া হয়েছে। ওই আইনের বলে নির্বাচন কমিশন নাগরিকদের স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বা লেমিনেটেড জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে আসছে।
এছাড়া জাতীয় পরিচয়পত্রে থাকা তথ্য-উপাত্ত সংশোধন, সংযোজন ও বিয়োজনের কাজও ইসির অধীন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা করে আসছেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা বাস্তবায়ন হলে সেই কার্যক্রম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হাতে চলে যাবে। ভোটার তালিকা আইন, ২০০৯ অনুসারে নতুন ভোটার অন্তর্ভুক্তি বা মৃতদের নাম তালিকা দেওয়ার এখতিয়ার ইসির হাতেই থাকবে। যদিও নতুন ভোটার অন্তর্ভুক্তি ও জাতীয় পরিচয় সংক্রান্ত সেবা একই সার্ভার থেকে দিয়ে আসছে ইসি।