আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের সাংসদ মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে নয়, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিলে দেশ-জাতি উপকৃত হবে।
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটায় ফেসবুকে এক পোস্টে এ কথা লেখেন তিনি। পোস্টের বিষয়ে জানতে চাইলে মাহবুব উল আলম হানিফ সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে নিয়ে ঘটে যাওয়া ঘটনার নিন্দা জানান
মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘সরকারের কোনো মন্ত্রণালয়ের কোনো কর্মকর্তা বা ব্যক্তিবিশেষের কারণে ভাবমূর্তি নষ্ট হবে, এটা কোনোভাবে কাম্য নয়। আমরা চাই প্রত্যেকটা মন্ত্রণালয় স্বচ্ছভাবে কাজ করুক, প্রধানমন্ত্রীর যে চিন্তাচেতনা, দেশের জন্য যে পরিকল্পনা, সেটা বাস্তবায়নে এগিয়ে যাক। দেশ এগিয়ে যাক, সরকারের ইমেজ আরও উজ্জ্বল হোক।’
মাহবুব উল আলম হানিফ প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের সঙ্গে সচিবালয়ে যে ঘটনা ঘটেছে, সেটিকে অত্যন্ত দুঃখজনক, অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা বলে উল্লেখ করেন। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান তিনি। এ ধরনের ঘটনা কখনোই কাম্য নয়।
মাহবুব উল আলম হানিফ আরও বলেন, ‘করোনাকালে স্বাস্থ্যব্যবস্থার দুর্বলতা থাকা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা মোকাবিলা করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। উনি কখনো দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেন না, তিনি শক্ত অবস্থানে আছেন। ইতিমধ্যে যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এসেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে গত পাঁচ–সাত বছরে ক্ষমতাসীন দলের অনেক সাংসদের বিরুদ্ধে দুদক তদন্ত করেছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে গুটিকয়েক মন্ত্রী–সচিবই যথেষ্ট: মারুফা আক্তার
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মারুফা আক্তার তাঁর ফেসবুক আইডিতে প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে হেনস্তার ঘটনায় ক্ষোভ ও রোজিনা ইসলামের মুক্তি চেয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
রোজিনা ইসলাম ও তাঁর স্বামী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মনিরুল ইসলাম মিঠুর সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক থাকার কথা তুলে ধরে মারুফা আক্তার লেখেন, ‘গতকাল থেকে সকলের মুখে মুখেই রোজিনা ইসলাম! তাঁর মুক্তির জন্য সাংবাদিকদের আন্দোলন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর মুক্তি দাবি, কোনো কিছুতেই কিছু হলো না!! তাঁর জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠিয়েছে মহামান্য আদালত। রোজিনা আপা এখন আদালতের বিষয়। সকলের মতো আমিও তাঁর মুক্তি চাই।’
হেনস্তা করার একটি ছবি দিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘…রোজিনা আপার ওপর হামলার এই ছবিটা দেখে আমার মনে অনেক প্রশ্ন জেগেছে। অনেকেই বলেছেন তাঁকে হেনস্তা করা হয়েছে , এটা কি শুধুই হেনস্তা? যে আইন/আদালত রোজিনা আপার জামিন নামঞ্জুর করলেন, আইনের সেই নিরপেক্ষ চোখের সহজ ভাষায় এটা হতে পারে অ্যাটেম্প টু মার্ডার। হামলাকারী এই ভদ্রলোক/ভদ্রমহিলাদের ব্যাপারে আইনআদালত কি আদৌ কোনো ব্যবস্থা নেবেন?’
মারুফা আক্তার লেখেন, ‘একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে মনে করি, প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হলেন প্রজাতন্ত্রের তথা জনগণের সেবক। একজন অফিসারের এমন আচরণে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একটা সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা থাকা দরকার। নিজের মুখ ঢেকে একজন সিনিয়র সাংবাদিকের গলা টিপে ধরার এই ছবিটা কি উদ্দেশ্য প্রণোদিত ?… ।’ তিনি বলেন, ‘ দিন শেষে আমার পরিচয়—আমি একজন সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী। সহযোদ্ধার হৃদয়ের রক্তক্ষরণে আমার হৃদয়েও রক্ত ঝরে। মিঠু ভাইকে সান্ত্বনা দেওয়ার মতো কোনো ভাষাই আজ আমার কাছে নেই। শুধু ক্ষমা চাওয়া ছাড়া। পরিশেষে বলব, সরকারকে বাঁশ দেওয়ার জন্য (সবাই কিন্তু নয়) এমন দু–একটা মন্ত্রণালয় আর গুটিকয়েক মন্ত্রী, সচিব, কর্মকর্তাই যথেষ্ট! অতএব সাধু সাবধান।’