যশোরে মাদকাসক্তি নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে মাহফুজুর রহমান (৩০) নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আজ সোমবার ভোররাতে নিরাময় কেন্দ্রের দুই পরিচালকসহ ১৪ জন কর্মকর্তাদের আটক করেছে পুলিশ।
প্রতিষ্ঠানের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে নির্যাতনের চিত্র দেখে কেন্দ্রের দুই পরিচালক মাসুদ করিম ও আশরাফুল কবিরসহ ১৪ জনের নামে মামলা করেন নিহতের পিতা মনিরুজ্জামান। মামলার পর পুলিশ সব আসামিকেই আটক করেছে।
সিসি ফুটেজে দেখা গেছে, গত শনিবার ৮ থেকে ১০ জন মিলে মাহফুজুরকে মেঝেতে ফেলে পা দিয়ে চেপে ধরে দফায় দফায় মারছে। ছয় মিনিটের ভিডিওতে মাহফুজুরের ওপর অত্যাচারের দৃশ্য দেখা যায়।
নিহত মাহফুজুর রহমান চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার মনিরুজ্জামনের ছেলে।
নিহতের পিতা মনিরুজ্জামান যশোর কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা মামলায় উল্লেখ করেন, গত ২৬ এপ্রিল চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর থানা পুলিশের সহায়তায় মাদকাসক্ত ছেলে মাহফুজুরকে যশোর মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করান।
গত ২২ মে বিকেলে নিরাময় কেন্দ্রের পরিচালক মাসুদ করিম তাকে ফোনে জানান, মাহফুজুর অসুস্থ। তখন তিনি ও তার দুই আত্মীয়কে সঙ্গে নিয়ে যশোরে যান। কিছু সময় পর তাকে ফোনে জানানো হয় তার ছেলে মারা গেছেন। মরদেহ যশোর সদর হাসপাতালে রয়েছে।
নিহতের পিতা সন্ধ্যায় যশোরে পৌঁছে ছেলের মরদেহ দেখতে পান। তখন তার সন্দেহ হওয়ায় ছেলের শরীর ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে তার ডান হাতের কবজিতে কামড়ানো দাগ, বাম কাঁধের ওপর এবং পিঠের ডান ও বাম পাশে কালচে থেঁতলানো দাগসহ বিভিন্নস্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখেন।
যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি তাজুল ইসলামগণমাধ্যমকে বলেন, ‘ভিডিও ফুটেজ উদ্ধার করা হয়েছে। মামলার পর এজাহারভুক্ত ১৪ আসামিকেও আটক করা হয়েছে।’
‘আজ সোমবার তাদের আদালতে সোপর্দ করা হবে’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। এ ঘটনায় অন্য কেউ জড়িত আছে কি না সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
স্থানীয়রা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, মাদকাসক্তি নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে চিকিৎসা সেবার নামে রোগীদের ওপর ব্যাপক নির্যাতন করা হয়ে থাকে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ এপ্রিল মাহফুজুর রহমানকে এই কেন্দ্রে তিন মাসের জন্য ৪০ হাজার টাকার প্যাকেজে ভর্তি করানো হয়।