রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলা মডেল মসজিদ, খুলনা সদর মডেল মসজিদ ও সিলেট দক্ষিণ সুরমা মডেল মসজিদের সাথে সরাসরি সংযুক্ত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মডেল মসজিদ প্রকল্প পরিচালক নজিবুর রহমান গণমাধ্যমকে এই তথ্য জানিয়েছেন। গত ২ জুন প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব-১ মনিরা বেগম এর স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়।
১০ জুন যে ৫০টি উপজেলায় মডেল মসজিদ উদ্বোধন করা হবে সেগুলো হলো— ঢাকার সাভার, ফরিদপুরে মধুখালী, সালথায়, কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া ও কুলিয়ারচর, মানিকগঞ্জের শিবালয়, রাজবাড়ী সদর, শরীয়তপুর সদর ও গোসাইরহাট, বগুড়ার সারিয়াকান্দি, শেরপুর ও কাহালু, নওগাঁর সাপাহার ও পোরশা, সিরাজগঞ্জ জেলা সদর ও উপজেলা সদর, পাবনার চাটমোহর, রাজশাহীর গোদাগাড়ী ও পবা, দিনাজপুরের খানসামা ও বিরল, লালমনিরহাটের পাটগ্রাম, পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ ও উপজেলা সদর, রংপুর জেলা সদর, মিঠাপুকুর, উপজেলা সদর, পীরগঞ্জ, বদরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর, নোয়াখালীর সুবর্ণচর, ময়মনসিংহের গফরগাঁও ও তারাকান্দা,
চট্টগ্রাম জেলা সদর, লোহাগড়া, মিরসরাই ও সন্দ্বীপ, জামালপুরের ইসলামপুর ও উপজেলা সদর উপজেলা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর ও বিজয়নগরে, ভোলা সদর, সিলেটের দক্ষিণ সুরমা, কুমিল্লার দাউদকান্দি, খাগড়াছড়ির পানছড়ি, কুষ্টিয়া সদর, খুলনার জেলা সদর, চাঁদপুরের কচুয়া, ঝালকাঠির রাজাপুর এবং চুয়াডাঙ্গা সদর।
মসজিদগুলো ৪০ হাজার বর্গফুটের এ-ক্যাটাগরির প্রতিটি মসজিদে একসঙ্গে প্রায় ১ হাজার ২০০ ব্যক্তি নামাজ আদায় করতে পারবেন। উপজেলা ও উপকূলীয় এলাকার মডেল মসজিদগুলোতে ৯০০ জন একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন। আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধাসহ এসব মসজিদে থাকছে পবিত্র কোরআন হেফজ বিভাগ, ইসলামিক বই বিক্রয় কেন্দ্র, ইসলামিক সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স পাঠাগার, গবেষণা কেন্দ্র, শিশুশিক্ষা, মেহমানখানা, পর্যটকদের আবাসন, মৃত ব্যক্তির লাশের গোসলের ব্যবস্থা, হজযাত্রীদের নিবন্ধন ও প্রশিক্ষণ, ইমামদের প্রশিক্ষণ, গণশিক্ষা কেন্দ্র ও ইসলামি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র।
জানা গেছে, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অধীনে সারাদেশে ৫৬০টি আধুনিক মডেল মসজিদ নির্মাণে প্রকল্পে সউদী সরকার অর্থের যোগান দেয়ার আশ্বাস দিয়ে তা’অসম্মতি প্রকাশ করলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই এসব মসজিদ নির্মাণে ৮ হাজার ৭২২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেন। প্রথম পর্বে সরকার এসব মসজিদে নির্মাণে বরত হাজার ৫৪৫ কোটি টাকা ছাড় দিয়েছে। এরই মধ্যে ৫০টি মডেল মসজিদের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। বাকি মডেল মসজিদের নির্মাণ কাজও চলমান রয়েছে। গৃহায়ন ও গণপূর্ত অধিদফতর এসব মডেল মসজিদ দক্ষতার সাথে নির্মাণ করছে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মডেল মসজিদ প্রকল্প পরিচালক নজিবুর রহমান গণমাধ্যামকে বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি সংক্রমণ রোধে সরকারি নিদের্শনায় সকল মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন বাজেটের অর্থ থেকে ১৫% কেটে রাখা হয়। কিন্ত সমন্বয়ের বেড়াজালে পড়ে মডেল মসজিদ নির্মাণ প্রকল্পের ছাড়কৃত এক হাজার ৫৪৫ কোটি টাকা থেকে করোনা সংক্রন্ত তহবিলে ১৭ দশমিক ২ শতাংশ অর্থ কেটে রাখা হয়েছে। এতে নির্মাণাধীন মডেল মসজিদ প্রকল্প আর্থিকভাবে লসের মুখে পড়ল। এক প্রশ্নের জবাবে প্রকল্প পরিচালক বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, চলতি আগামী অর্থ বছরে (২০২১-২০২২) দ্বিতীয় পর্বে আরো ১০০টি মডেল মসজিদ নির্মাণ কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য অর্থ বরাদ্দ দেয়া হবে।
গণপূর্ত অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, মোট ৫৬০টির মসজিদের মধ্যে জেলা পর্যায়ে ৬৯টি, উপজেলা পর্যায়ে ৪৭৫টি ও উপকূলীয় অঞ্চলে ১৬টি রয়েছে। অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী তিন ক্যাটাগরিতে হওয়া জেলা পর্যায়ে চার তলাবিশিষ্ট মসজিদ এ-ক্যাটাগরি, উপজেলার তিন তলাবিশিষ্ট বি-ক্যাটাগরি এবং উপকূলীয় এলাকায় চার তলাবিশিষ্ট সি-ক্যাটাগরি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। এগুলোর এ-ক্যাটাগরির প্রতিটির আয়তন প্রায় ৪০ হাজার বর্গফুট, বি-ক্যাটাগরির আয়তন প্রায় ৩০ হাজার বর্গফুট ও সি-ক্যাটাগরির আয়তন ৩০ হাজার বর্গফুট।