রোববার (২ মে) স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৭টা থেকে পোস্টাল ব্যালট এবং সকাল ৮টা থেকে পশ্চিমবঙ্গে শুরু হয় ইভিএম’র ভোটগণনা।
সবার নজর পশ্চিমবঙ্গে ২৯২টি বিধানসভা আসনে। ২০১১ বিধানসভায় রাজ্যে পালাবদলের পর থেকে মমতার তৃণমূল সরকার রয়েছে ক্ষমতায়। তৃতীয় বারের জন্য ফের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসবেন বলেই দাবি করেছে শাসক দল। অন্য দিকে এ বার বাংলায় ‘ডবল ইঞ্জিন’ সরকার ক্ষমতায় আসবে বলে দাবি করেছে বিজেপি শিবির। কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি নাকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূলই হ্যাটট্রিক ক্ষমতায় থাকছে ভারতে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে তা কিছুক্ষণের মধ্যেই স্পষ্ট হয়ে যাবে। আলোচিত এই নির্বাচনের প্রাথমিক ভোট গণনায় মিলেছে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ইঙ্গিত।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে এখন পর্যন্ত তৃণমূল কংগ্রেস ১৩৯টি আসনে এবং বিজেপি ১১৮টি আসনে এগিয়ে রয়েছে। আর আসামে ৭৩ আসন পেয়ে বিজেপি আবারও ক্ষমতায় আসছে।
বিধানসভা নির্বাচনে মোট ২৯৪টি আসনের মধ্যে ১৪৮টিতে জয় পেলে নিশ্চিত হবে মসনদ। অবশ্য প্রার্থী মারা যাওয়ার কারণে ২টি আসনে নির্বাচন পিছিয়েছে।
করোনা মহামারীর বিষয়টি মাথায় রেখে গণনাকেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে আগের তুলনায়। আগেরবার যেখানে ৯০টি গণনাকেন্দ্র ছিল, এবার তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ১০৮টি।
১০ বছর আগে বামদুর্গ ভেঙে এ রাজ্যে ঘাসফুল ফুটিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১৬ সালেও সেই ধারা অব্যাহত ছিল। কিন্তু ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের ফল বুঝিয়ে দেয়, পশ্চিমবঙ্গে একটা বড় অংশের মানুষ গেরুয়া শিবিরের দিকে ঝুঁকেছেন।
রবিবার পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও আসাম, তামিলনাড়ু, কেরালা এবং পুদুচেরিতেও ভোট গণনা। তবে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দিকেই নজর সবার।
ভোট গণনার প্রাথমিক প্রবণতা থেকে এটা নিশ্চিত যে, দীর্ঘদিন পর পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভাতে একটা শক্ত বিরোধী শক্তি দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা ক্রমশঃ স্পষ্ট হচ্ছে।
বস্তুত ১৯৭২ সাল থেকেই পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভাতে জোরালো বিরোধী শক্তি বলে কিছু ছিল না। ফলে শাসক শিবির বিধানসভার কক্ষকে সমুচিত গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়ে তেমন একটা যত্নবান ছিল না।
গণতন্ত্রে শক্তিশালী বিরোধী পক্ষ অত্যন্ত জরুরি। দীর্ঘদিন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভাতে এই শক্তিশালী বিরোধী না থাকার মাশুল মানুষকে অনেকখানি দিতে হয়েছে।
প্রাথমিক গণনাতে একটা প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, বিজেপি ও তৃণমূল যে সাম্প্রদায়িক বিভাজনের রাজনীতি প্রচারপর্বে চালিয়েছিল, তার সুফল এই দুটি দলই সম্ভবত ঘরে তুলতে পারবে।
এই বিভাজনের রাজনীতির বাইরে মানুষের রুটি-রুজির সমস্যাকে তুলে ধরেছিল সংযুক্ত মোর্চা, মূলত বামপন্থীরা। মেরুকরণের রাজনীতির কাছে এই রুটি-রুজির প্রশ্নগুলো যে তেমন গুরুত্ব পায়নি, ফলাফলের প্রাথমিক প্রবণতা থেকে তা ওঠে আসছে।