জাপানের অর্থনীতির ওপর করোনাভাইরাস সংক্রমণের ক্ষতিকর প্রভাবের কথা শুরু থেকেই দেশের সংবাদমাধ্যমগুলো বলে আসছিল। একই সঙ্গে আরও বলা হচ্ছিল যে, অর্থনীতি মন্থর হয়ে আসার শিকার শুরুতে যাদের হতে হবে, তারা হচ্ছেন বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অনিয়মিত কর্মী। জাপানের শ্রম মন্ত্রণালয়ের গতকাল প্রকাশিত সর্বশেষ উপাত্তে এই ধারণার সত্যতা এখন আরও পরিষ্কারভাবে ফুটে উঠেছে।
মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে জুন মাসের ৫ তারিখ পর্যন্ত ২০ হাজার ৯৩৩ জন কর্মীকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে কিংবা চাকরির চুক্তি নবায়ন করা হয়নি। সার্বিক এই হিসাবের মধ্যে একমাত্র মে মাসেই চাকরি হারিয়েছেন প্রায় ১৩ হাজার কর্মী।
সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ চাকরি হারিয়েছেন হোটেল ও হোটেল সম্পর্কিত ব্যবসায়। এই সংখ্যা হচ্ছে ৪ হাজার ৩৪৮। এর পরে আছে রেস্তোরাঁ ব্যবসা, যেখানে চাকরিচ্যুত মানুষের সংখ্যা হচ্ছে ৩ হাজার ৪৮৪। করোনার ধাক্কায় চাকরি-বাজারের অস্থিরতা থেকে মুক্ত থাকেনি জাপানের উৎপাদন খাতও। এই খাতে ২ হাজার ৮০০ জনের বেশি চাকরিচ্যুত হয়েছেন।
সংখ্যাগত এই হিসাব জাপানের বিভিন্ন জেলার শ্রম কার্যালয়ের সংগ্রহ করা উপাত্তের ভিত্তিতে করা হয়েছে। শ্রম মন্ত্রণালয়ের অধীন এসব কার্যালয় প্রধানত নিয়মিত কর্মীদের অবস্থার ওপর আলোকপাত করে থাকে। ফলে শ্রম বাজারের অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, অনিয়মিত শ্রমিকদের হিসাব এই তালিকায় আরও পরিষ্কারভাবে ফুটিয়ে তোলা হলে চাকরি হারানো মানুষের সংখ্যা হবে আরও অনেক বেশি। তারা আরও বলছেন, জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়া হলেও স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় মানুষ এখনো ফিরে যায়নি বলে অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব আরও কিছু সময় ধরে অব্যাহত থাকবে। ফলে এর সম্ভাব্য পরিণতি হিসেবে চাকরি হারানো মানুষের সংখ্যা আগামী দিনগুলোতে আরও বৃদ্ধি পাবে।
এদিকে জাপানে নতুন করোনাভাইরাস আক্রান্তদের শনাক্ত হওয়ার সংখ্যা হ্রাস পেয়ে চললেও একেবারে থেমে আসার লক্ষণ এখনো দেখা যায়নি। সারা দেশে আজ বুধবার ৪৫টি নতুন সংক্রমণ শনাক্ত করা হয়। এর মধ্যে ১৮টি শনাক্ত হয়েছে রাজধানী টোকিওতে। এ নিয়ে দেশে মোট শনাক্তের সংখ্যা এখন দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৯২৯-এ এবং মৃত্যুর সংখ্যা হচ্ছে ৯৩৬।